কমিউনিজমের মতাদর্শগত ভিত্তি প্রসঙ্গে সংক্ষেপে কয়েকটি কথা;
“দার্শনিক পৃথিবীকে নানাভাবে ব্যাখ্যা করেছেন ; কিন্তু কথাটা হল তাকে পরিবর্তিত করা।” ১২০ বছর পূর্বে ব্যক্ত তরুণ কার্ল মার্কসের এই চিন্তাধারাকে কমিউনিস্ট মতাদর্শের চাবিকাঠি হিসাবে ধরা যেতে পারে । এই উক্তিটি অনেকগুলি প্রশ্নকে তুলে ধরে যার উত্তর না দিয়ে পৃথিবীকে ইচ্ছাকৃতভাবে পরিবর্তন করার মত অত্যন্ত কঠিন কাজে হাত দেওয়া যায় না৷
আমাদের চারপাশের পৃথিবীকে উদ্দেশ্যমূলকভাবে রূপান্তরিত করা কি মানুষের সাধ্যায়ত্ত ? মানুষ কোন্ দিকে তার প্রচেষ্টাকে চালিত করবে, কী সে অর্জন করার চেষ্টা করবে এবং কী জন্য ?
মানুষের ইচ্ছা-নিরপেক্ষভাবে প্রকৃতি তার নিজের নিয়মে চলে। মানুষ প্রকৃতির বিভিন্ন শক্তিকে শৃঙ্খলাবদ্ধ করে তার নিয়মগুলিকে আয়ত্ত ক’রে এবং সেইগুলিকে নিজের কাজে লাগিয়ে। মানুষ পরমাণুরে রহস্য উদ্ঘাটিত করেছে এবং তার প্রচণ্ড শক্তিকে কাজে লাগাচ্ছে। সে দুঃসাহসের সঙ্গে মহাকাশে পদক্ষেপ করেছে। আজ আর আমরা নতুন কোনো মহাকাশযাত্রার খবর পড়ে তেমন বিস্ময় । বোধ করি না। আমরা শুধু নিজেদের প্রশ্ন করি : “সবকিছু ঠিক আছে তো? মহাকাশচারী নির্বিঘ্নে পৃথিবীর বুকে নেমে আসবেন যদি সব হিসেব ঠিক থাকে, যদি মহাকাশযানটি নির্ভরযোগ্যভাবে তৈরী হয়ে থাকে ।”
বস্তুতঃ, গণিতশাস্ত্র, পদার্থবিদ্যা, রাসায়নবিদ্যা অথবা জীববিদ্যার নিয়মগুলি মেনে মানুষ আশ্চর্য সব জিনিস করতে পারে। মানুষ তার চারপাশের বস্তু- জগৎকে শুধু ব্যাখ্যাই করতে পারে না, তাকে উদ্দেশ্যমূলকভাবে পরিবর্তিতও করতে পারে। আজকাল এটা একটা স্বতঃপ্রমাণিত সত্য। একথা এখানে আবার স্মরণ করছি শুধু এই জন্য যে, যাঁরা বলেন সামাজিক জীবনকে পরিবর্তিত করা মানুষের সাধ্যাতীত, তাঁরা যে কত ভ্রান্ত তা জোর দিয়ে বলার উদ্দেশ্যে।
যাঁরা ওই দৃষ্টিভঙ্গি অনুসরণ করে চলেন তাঁদের পক্ষে আধুনিক যুগে যেসব বিরাট সামাজিক পরিবর্তন ঘটে যাচ্ছে তার অর্থ অনুধাবন করা দুষ্কর। অবশ্যই…
কমিউনিজম কি ও কেন ?
(প্রশ্নোত্তরে)
মনীষা
গ্রন্থালয় প্রাইভেট লিমিটেড
৪/৩ বি, বঙ্কিম চ্যাটার্জি স্ট্রীট
কলিকাতা-১২
প্রথম প্রকাশ : জুন, ১৯৭২
প্রকাশক : দিলীপ বসু
মনীষা গ্রন্থালয় ( প্রাঃ ) লিমিটেড
৪/৩ বি, বঙ্কিম চ্যাটার্জি স্ট্রীট,
কলকাতা-১২
মুদ্রক : হরিপদ দে
কালান্তর প্রেস
৩০/৬ ঝাউতলা রোড
কলকাতা-১৭
দাম : চল্লিশ পয়সা
