নোনাজল
সেই গোয়ালন্দ-চাঁপুরী জাহাজ। ত্রিশ বৎসর ধরে এর সঙ্গে আমার চেনাশোনা। চোখ বন্ধ করে দিলেও হাতড়ে হাতড়ে ঠিক বের করতে পারব, কোথায় জলের কল, কোথায় চা-খিলির দোকান, মুরগীর খাঁচাগুলো রাখা হয় কোন জায়গায়। অথচ আমি জাহাজের খালাসী নই- আবরের-সবরের যাত্রী মাত্র। 
ত্রিশ বৎসর পরিচয়ের আমার আর-সবই বদলে গিয়েছে, বদলায়নি শুধু ডিসপ্যাচ স্টীমারের দল! এ-জাহাজের ও-জাহাজের ডেকে-কেবিনে কিছু কিছু ফেরফার সব সময়ই ছিল, এখনও আছে, কিন্তু সব কটা জাহাজের গন্ধটি হুবহু একই। কী রকম ভেজা-ভেজা, সোঁদা-সোঁদা, আর সব-কিছু ছাপিয়ে ওঠে, সেটা মুরগী-কারি রান্নার। আমার প্রায়ই মনে হয়েছে, সমস্ত জাহাজটিই যেন একটা আস্ত মুরগী, তারই পেট্রে ভেতর থেকে যেন তারই কারি রান্না আরম্ভ হয়েছে। এ-গন্ধ তাই চাঁদপুর, নারায়ণগঞ্জ, গোয়ালন্দ, যে কোন স্টেশনে পৌঁছানো মাত্রই পাওয়া যায়। পুরনো দিনের রূপরসগন্ধস্পর্শ সবই রয়েছে, শুধু লক্ষ্য করলুম ভিড় আগের চেয়ে কম।…
সৈয়দ মুজতবা আলীর শ্রেষ্ঠ গল্প
সৈয়দ মুজতবা আলী
প্রথম পাকিস্তানী সংস্করণ : ১৩৬৮ 
প্রকাশক : রুহুল আমিন নিজামী
ষ্ট্যান্ডার্ড পাবলিশার্স লিমিটেড
৩/১০, লিয়াকত এভন্যু,
(ভিক্টোরিয়া পার্ক), ঢাকা-১
মূল্য : চার টাকা
 
						 
																					
 
		
		
		
	 
		
		
		
	 
		
		
		
	