নালন্দা। এতদিন ভাবতাম, শুধু এই তিনটি অক্ষরই একটা যুগকে বাঁচিয়ে রেখেছে। একটি মাত্র ধ্বনি একটা যুগের ইতিহাসকে নিঃশব্দে ধারণ করে আছে। কিন্তু নালন্দায় নেমে এ ভুল আমার ভেঙ্গে গেল। এ তো শুধু অক্ষর নয়, ধ্বনিও নয় । এ যে একটা ঐশ্বর্যময় অতীতের অমর ইতিহাস, বিস্মৃতদিনের বিপুল কীর্তির বিরাট স্বাক্ষর। স্তব্ধ বিস্ময়ে আমি ভারতের অন্য রূপ দেখলাম—শান্ত-সমাহিত ধ্যানগম্ভীর মৌনরূপ। প্রাচীন জগতের শ্রেষ্ঠ বিশ্ববিদ্যালয় নালন্দা আমার চোখের সামনে ।
ছোট লাইন বললেও সম্পূর্ণ বলা হয় না । দেশলাইয়ের বাক্সর মতো ছোট ছোট গাড়ি । ইংরেজী নাম লাইট রেলওয়ে। বিহার- বক্তিয়ারপুর লাইট রেলওয়ে। বড় লাইনের বক্তিয়ারপুর স্টেশন থেকে রাজগীর পর্যন্ত তেত্রিশ মাইল বিস্তৃত। নালন্দা এই লাইনেরই একটি নগণ্য স্টেশন। গাড়ি থেকে নেমে মনে হবে, একটা লেভেল ক্রসিঙের উপর নামলাম, আর স্টেশনটি কোন গেটম্যানের বাড়ি । রাজগীর থেকে যে সরকারী রাস্তা বক্তিয়ারপুর গেছে, তারই উপর স্টেশন । পা প্ল্যাটফর্মে পড়ে না। প্ল্যাটফর্ম নেই। পড়ে এই বড় রাস্তার উপরেই। সেখানে এক্কার মতো গাড়ি দাঁড়িয়ে আছে অগণিত। উঠে বসলেই পাকা রাস্তা ধরে টেনে আনবে নালন্দার দরজায় ।
বড় গাছের নিচে একটা ছোট চায়ের চালা। সেই চালার নিচে কয়েকজন মেয়েপুরুষ বসেছে চা খেতে। তিব্বতী হতে পারে ৷ সিকিমের লোকও হতে পারে। অদ্ভুত তাদের বেশভূষা ! লম্বা ঢিলা আলখাল্লা নয়, পরনে পুরু মোটা কাপড়ের ঘাগরা, গায়ে…
জনম জনম
সুবোধকুমার চক্রবর্তী
প্রথম প্রকাশ : আষাঢ়, ১৩৬৭
প্রকাশক : নারায়ণ সেনগুপ্ত
ক্লাসিক প্রেস, ৩/১ এ, শ্যামাচরণ দে ষ্ট্রীট, কলিকাতা–১২
প্রচ্ছদ : গণেশ বসু
মুদ্রাকর : ইন্দ্রজিৎ পোদ্দার
শ্রীগোপাল প্রেস, ১২১, রাজা দীনেন্দ্র ষ্ট্রীট, কলিকাতা।
দাম : উল্লেখ নাই
 
						 
																					
 
		
		
		
	 
		
		
		
	 
		
		
		
	