৭৮’ ২১শে ফেব্রুয়ারী ও ছাত্রসমাজ
দীর্ঘদিনের বিদেশী শাসন, শোষণ ও ষরযন্ত্রের শিকল পেরিয়ে ২১শে ফেব্রুয়ারীই বাঙালী জাতির জীবনে নবদিগন্ত উন্মোচনের, জন্মগত অধিকার প্রতিষ্ঠায় রক্তাক্ত দিন। একুশে রক্ত দিয়েছিল ছাত্র সমাজ । কাজেই একুশ যেমন জাতির গৌরব, তেমনি ছাত্র সমাজ একুশের গর্ব। ছাব্বিশ বছর হাটি হাটি পা পা করে অনেক বিজয়ের, সর্বোপরি স্বাধীনতার পতাকাবাহী একুশ আমাদের সামনে হাজির। একুশ প্রতি বছর আসে নব চেতনায় এবারও এসেছে ছাত্র ‘সমাজের কাছে অর্থনৈতিক, মুক্তি সংগ্রামের ডাকনিয়ে।
জাতীয় জীবনে একুশের গুরুত্ব ও তাৎপর্য্য অনেক। বাঙালী জাতির অধিকার হনন ও শোষণের বিরুদ্ধে একুশ প্রথম সফল প্রতিবাদ। একুশের শিক্ষা এ-দেশের বিভিন্ন গণতান্ত্রিক আন্দোলনে আমাদের বার বার অনুপ্রাণিত করেছে। আর এর সর্বশেষ ফলশ্রুতি হোল বর্বর হানাদার পাক সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে শসস্ত্র মুক্তিযুদ্ধ; রাজনৈতিক স্বাধীনতা অর্জন। একুশের সম্পর্ক ছাত্র সমাজের কাছে অতীব নিবিড়। এদেশের ছাত্র সমাজ একুশের প্রেরণায় উদ্বুদ্ধ হয়ে ১৯৪৭ সালের পাকিস্তান সৃষ্টির পর পর চরম ধর্মাঙ্ক ও বাংগালী বিরোধী শাসনতান্ত্রিক মূলনীতির বিরুদ্ধে, ১৯৫২ সালের ভাষা আন্দোলনে, ১৯৫৪ সালের স্বৈরাচারী মুসলিম লীগ সরকার উৎখাতে ১৯৬২ সালের রহমান শিক্ষা কমিশন রিপোর্ট বাতিলের দাবিতে, আইয়ুবের সামরিক শাসনের বিরুদ্ধে, ১৯৬৪ এর প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে, ১৯৬৬-এর ৬ দফা আন্দোলনে এবং সর্বশেষ ১৯৭১ এর সশস্ত্র স্বাধীনতা সংগ্রামে সীমাহীন ত্যাগের বিনিময়ে অংশ গ্রহণ করেছে। প্রতিক্রিয়াশীল শাসক- গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে বিভিন্ন গণতান্ত্রিক আন্দোলনের সফল সংগ্রামের, সর্বোপরি ত্রিশ লক্ষ শহীদদের বিনিময়ে, দু লক্ষ মা বোনের ইজ্জতের বিনিময়ে আমরা অর্জন করেছি রাজনৈতিক স্বাধীনতা। রাজনৈতিক স্বাধীনতা তথা বিভিন্ন গণতান্ত্রিক, আন্দোলনে সবিশেষ অবদান রেখেছে ছাত্র সমাজ বাংলার ইতিহাসে ছাত্র সমাজের অবদান চিরদিন স্বর্ণাক্ষরে লেখা থাকবে।
স্বদেশ
একুশের সংকলন
বাংলাদেশ ছাত্র সমিতি
সম্পাদনা করেছেন : মোস্তাফিজুর রহমান
প্রকাশ করেছেন : বাংলাদেশ ছাত্র সমিতির কেন্দ্রীয় আহ্বায়ক কমিটি
৯৫ নিউ এলিফেন্ট রোড, ঢাকা
ছেপেছেন : কাগজী মুদ্রায়ণ
২৫/এ টিপুসুলতান রোড, ঢাকা
প্রচ্ছদ এঁকেছেন : কাইয়ুম চৌধুরী
শুভেচ্ছা মূল্য : দুই টাকা
