চীন। প্রশান্ত মহাসাগর থেকে হিমালয়ের পাদদেশ পর্য ন্ত বিস্তীর্ণ এক দেশ৷এই মাটিতে মহাসমদ্রের ঢেউরাশির মতো ঘটেছে সামাজিক উত্থান এবং পতন, আর ঐ উত্থান-পতনের মধ্যে জন্ম নিয়েছে পর্বত-শিখরের মতো সভ্যতার মহাতীর্থ স্থান। তবে সে সভ্যতা হয়তবা এথেনীয় বা রোম সভ্যতার মত ব্যাপক নয় ; প্লাটো, এরিসটোটল, ডেমোক্রিটাস বা পিথাগোরাসের মতো বিশ্বনন্দিত দার্শনিক-ঋষিদের সমন্বিত সারের ঐকতানে সভ্যতার বীণা এখানে ঝংকৃত না হলেও কনফাসিয়ার মতো দার্শনিকের আর দাওবাদ বা বৌদ্ধদর্শ নের মহান বাণী আন্দোলিত করেছে এখানকার মেষপালক থেকে রাষ্ট্রনায়কদের। হোমারের ইলিয়াড, ওডেসাঁ লেখ৷ না হলেও অসংখ্য কবিতা, গানে, রূপকথায় তারই মর্মবাণী হয়েছে ধ্বনিত। মাইকেল এঞ্জেলোর মতো ভাস্কর শিল্পীর জন্ম না হলেও এখানেও মননুষ্যত্ব বিকাশের সার্বিক রূপ প্রতিফলিত হয়েছে নাম না জান৷ বহ, ভাস্কর্যে, নীল নদের মতো হয়াংহে।, ইয়াংসিকিয়াং-এর তীরে গড়ে উঠেছে নগর সভ্যতার প্রাচীন রূপ। প্রটেস্টান্ট ধর্ম যাজকেরা বিশ্বাস করেছিলেন যে চীনের মাটিতেই তারা ভগ- বানের মহিমার নিপুণ হাতের ছোঁয়া পেয়েছেন। আর তাই হয়ত বা বহ পশ্চিম৷ পর্যটক, দার্শনিক, চিন্তাবিদ চৈনিক চিন্তাধারা আর আধ্যাত্মিক জগতের বিকশিত সত্তাকে পাশ্চাত্যের ভঙ্গর এবং ক্ষয়িষ্ণু সমাজের উদ্ধার- কল্পে ব্যবহৃত করার কঠিন ব্রত গ্রহণ করেছিলেন। হয়ত বা এজন্যে মহান ফরাসী দার্শনিক এবং সমাজতাত্ত্বিক ভলটেয়ারের রচনায় চৈনিক চিন্তাধারা ও তার ইতিহাস সব ধরনের অন্ধবিশ্বাসের উপর প্রজ্ঞার বিজয়ের উদাহরণ হিসেবে উল্লিখিত। স্বাতন্ত্রিকতার পাশাপাশি সমাজ বিকাশের চিরায়ত, শাশ্বত অমোঘ নিয়মের ছাপ এখানেও সস্পষ্টতায় বলীয়ান। আর এই ধারাই দীর্ঘ চরাই-উৎরাই পেরিয়ে ১৯৪৯ সালে চীনের মাটিতে বয়ে এনেছে সমাজ- তান্ত্রিক বিপ্লব, যে বিপ্লব পূর্বশর্ত সৃষ্টি করেছে নতুন মানবতাবাদী সমাজ নির্মাণের। কিন্তু যে সমাজ এতকাল মানবতাকে শোষণ, নিপীড়ন, বঞ্চনা দিয়ে কেবলমাত্র পদদলিতই করেছে, তাকে নিষ্প্রভ করে মানবতাবাদকে সমাজজীবনে…
চীনের দুঃখ
মাও সে তুং
অনুবাদ : বদরুল আলম খান
প্রচ্ছদ পরিকল্পনা : অশোক কর্মকার
প্রথম প্রকাশ: ফেব্রুয়ারী ১৯৮৫, মাঘ ১৩৯১
মূল্য : বারো টাকা
প্রকাশক : মফিদুল হক
জাতীয় সাহিত্য প্রকাশনী, ১০, পরানা পল্টন, ঢাকা-২
মুদ্রক : নর্থ বেঙ্গল প্রিন্টার্স
সি-৫৯২/ডি, মালিবাগ চৌধুরী পাড়া, ঢাকা-১৯
