গাঁয়ের পূর্বদিকের ঢালতে গত তিনদিন থেকে একটা ভীষণ কাণ্ড চলেছে। দুটি ষাঁড় লড়াইয়ে নেমেছে। যোদ্ধা দুটির একটির রং ধবধবে শাদা, কালো চুলঅলা চামরের মতো পরিচ্ছন্ন লম্বা লেজ, উচ, খাড়া কান্দে । এটি বিরাট আকারের, ঘাড়ের দিকটা সরু,, পাগুলোও তাই, কচকচে কালো দুই চোখ। নিবাস এই গ্রামেই। আর একটি বিদেশী—কোথা থেকে এসেছে ঠিক বলা যাচ্ছেনা—ধোঁয়াটে রং, বেটেখাটো শক্ত বাঁধ,নি, ছোট ছোট পা, ভীষণ মোটা গর্দান, চোখের রং ধোঁয়াটে, ছাই ছাই, নিচে কাজল পরানো। ভরর নিচে তিন চারটে করে বলিরেখা। দেখেই মনে হয় বদমেজাজী আর কাটে স্বভাবের। প্রায় সকলেই এই রকম মত দিয়েছে যে লড়াইটা বাধিয়েছে ঐ বাঁটকলটা। এ গাঁয়ের শাদা ষাঁড়টা নাকি ভারি লক্ষ্মী! ষাঁড় হলেও। ব্যাপারটার শব্দ, এইভাবে।
ভোরের দিকে বেড়া ভাঙার মত মড় মড় শব্দে মালেক মোড়লের ঘুম ভেঙে গেল। প্রায় তখনি সে ধরে নেয় যে বেগুনগাছগুলো শেষ হয়ে গেছে এবং শেষ করে গেছে শাদা ষাঁড়টাই। ধর্মের ষাঁড় বলে কেউ তাকে কিছ, বলে না । তাছাড়া বিবেচনা করে দেখলে সে অতি শিষ্ট ও ভদ্রস্বভাবেরও বটে। তবে গোজন্ম টিকিয়ে রাখতে গেলে খাদ্যগ্রহণও তো করতে হয়। মালেক মোড়ল হাড়কো হাতে বেরিয়ে গেল। হড়কো নেওয়া হয়েছিল ওটাকে ভয় দেখা- নোর জন্যে—পেটানোর জন্যে নয়। এমন আদরে স্বভাব ওর যে কিল চড় ঘাষি যাই চলক না কেন ইচ্ছে হলে দাঁড়িয়ে থাকবে কিংবা বসেই থাকবে বা যা খাচ্ছিল খেয়েই যাবে। মালেকের যাওয়াটা বৃথা হোল- সমস্ত ক্ষেতটিকে বিধস্ত করে চটকে বেড়া উপড়ে ফেলে দিয়ে সে তখন বড়ো মাঠাম গাছটায় শিং চুলকোচ্ছিল, হড়কো হাতে মালেককে আসতে দেখে ষাঁড়েন্দ্রগমনে…
জীবন ঘষে আগুন
হাসান আজিজুল হক
মুক্তধারা
প্রকাশক : চিত্তরঞ্জন সাহা
মুক্তধারা
[স্বঃ পুথিঘর লিঃ]
৭৪ ফরাশগঞ্জ, ঢাকা-১
বাংলাদেশ
প্রথম প্রকাশ : জুন ১৯৭৩
দ্বিতীয় প্রকাশ : অগাস্ট ১৯৮৫
প্রচ্ছদ-শিল্পী : কালাম মাহমুদ
মুদ্রাকর : প্রভাংশ রঞ্জন সাহা
ঢাকা প্রেস
৭৪ ফরাশগঞ্জ, ঢাকা-১
মূল্য : সাদা : ২৫.০০ টাকা
লেখক কাগজ : ১৮.০০ টাকা
স্বত্ব : শামসুন্নাহার হক
{JIBAN GHASHE AGUN Short Stories]
By Hasan Azizul Huq
Cover Design: Kalam Mahmud. Second Edition : June 1985 Publisher : C. R. Saha
MUKTADHARA
[Prop. Puthighar Ltd. 74 Farashganj, Dakha-1
Bangladesh
Price : Whiteprint : Taka 25.00 Lekhokprint : Taka 18.00
Reviews
There are no reviews yet.