বিতর্কের সূত্রপাত
বাংলাদেশের মতো তৃতীয় বিশ্বের বহু অঞ্চলে এবং সেই অর্থে লাতিন আমেরিকা ও আফ্রিকাতে তো বটেই, সমাজতন্ত্র সম্পর্কে একটি প্রচলিত অভিযোগ এখনো সত্য হয়ে আছে। এ অভিযোগে সমাজতান্ত্রিক সমাজ- ব্যবস্থার অর্থ হলো ধর্মহীনতায় ভোগা এবং মতবাদ হিসাবে মার্কসবাদের অর্থই হলো ধর্মকে আফিম হিসাবে গণ্য করা। এর ফল হিসাবে সমাজতন্ত্র যেমন ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, তেমনি ধর্মও তার প্রভাব বলয়কে সঙ্কি চিত করতে বাধ্য হয়েছে। সমাজতন্ত্রের ক্ষেত্রে ক্ষতিটি যে নগণ্য নয়, একথা স্বীকার করবেন অনেকেই। মার্কসবাদ হলো সমাজের বৈজ্ঞানিক বিশ্লেষণের পদ্ধতি, সমাজের বৈপ্লবিক পরিবর্তনের মূলমন্ত্র। সে কারণে আজ অনেক ধর্মপ্রাণ মানুষের কাছে. যারা সমাজ বাস্তবতাকে আবেগ বা ধর্মান্ধতার চেয়ে বস্তুনিরপেক্ষ বিশ্লেষণের দ্বারা নিরিখ করতে ইচ্ছ ক- সুস্পষ্ট হয়ে উঠছে মানব মুক্তির মূল মতবাদকে “ধর্মহীনতা’’য় অভিযুক্ত এবং হেয় প্রতিপন্ন করার অর্থই হয় মেহনতী তথা সমাজের বৃহত্তর জনগোষ্ঠীকে একটি নিষ্ঠুর, অমানবিক সমাজব্যবস্থা পরিবর্তনের মন-মানসিকতা গঠন প্রক্রি- য়ায় প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করা। আজ সত্যিকার ধর্ম বিশ্বাসীদের অনেকের মাঝে এ উপলব্ধি সুদৃঢ় হচ্ছে যে সমাজতন্ত্রকে নাক সিটকানোর জন্যই তারা বঞ্চিত হতে শুরু করেছে গণমানুষের শ্রদ্ধা থেকে। সাধারণ মানুষের চেতনায়, কতটুকু সঠিক সেটি বড় কথা নয়, এ ধারণাই গড়ে উঠেছে যে ধর্ম মানেই বাস্তবতাবর্জিত কিছু অনুশাসন, যেগুলোর অনুশীলন থেকে পাথিব জগতে ভাগ্যের তেমন পরিবর্তন সাধিত হয় না। বরং অবস্থার ক্রমাবনতিই হয়ে দাড়ায় নিত্যদিনের নিয়ম। অথচ তাদের আকাঙ্ক্ষায় সুখ-স্বাচ্ছন্দ্য, সমাজে বেঁচে থাকার অদম্য বাসনা মূর্ত আকারেই আবির্ভূত হয়। এটি কিভাবে অর্জন করা সম্ভব সে পথ ধর্ম বাতলে দিতে পারে না।
ধর্ম বনাম সমাজতন্ত্র
বদরুল আলম খান 
প্রকাশক : বদরুল আলম খান
প্রকাশকাল : উল্লেখ নাই
দাম : উল্লেখ নাই
মুদ্রণ : উল্লেখ নাই
 
						 
																					
 
		
		
		
	 
		
		
		
	 
		
		
		
	