লেখকের কৈফিয়ৎ
কুমারিল ছিলেন অষ্টম/নবম শতকের দার্শনিক। তাঁর মতামতের অতি- বড়ো সমালোচকও অস্বীকার করবেন না, অমন ক্ষুরধার বুদ্ধির নজির ভারতীয় দর্শনের ইতিহাসে সত্যিই বিরল। রচনা-কৌশলের দিক থেকেও আশ্চর্য৷ তীক্ষ্ণ বিচারের সঙ্গে তীব্র শ্লেষ মিলিয়ে বিপক্ষকে মিশমার করবার আশ্চর্য দক্ষতা !
তাঁরই একটা মন্তব্য থেকে শুরু করবো। কিন্তু মনে রাখা দরকার তাঁর প্রধান বই ‘শ্লোকবার্তিক’ শ্লোকে লেখা, তাই সাঁটে লেখাও। হুবহু তর্জমার চেষ্টা করার বদলে কিছুটা ব্যাখ্যামূলক ভূমিকা দিয়ে শুরু করলে বোঝবার সুবিধা হতে পারে।
দার্শনিক মহলে—কুমারিল বলছেন—একরকম লোক-ঠকানো কায়দা চালু আছে। বলবার কথাটা যতো দুর্বল কায়দাটার চাহিদাটাও ততো বেশি। বলবার কথায় যদি ফাঁকি থাকে তাহলে নেহাত সাদামাটা ভাষায় তা বললে তো সহজে ধরা পড়ে যাবার ভয় । জমকালো ভাষার মারপ্যাচ কষলে বরং কিছুটা নিরাপত্তা থাকে : সাধারণ লোক হকচকিয়ে যাবে, ভাববে ব্যাপারটাই বুঝি কে এমন গভীর যে থই পাওয়া চারটিখানি কথা নয়৷
কিন্তু তার বদলে যদি বলি “বক্ত সিব” ? সংস্কৃত শব্দের কোনো আটপৌরে নমুনা হিসেবে কুমারিল বলছেন, যদি বলি মুখের “লালা” তাহলে তো সাধারণ লোক সহজেই বুঝে ফেলবে। শুনে রীতিমতো মাথা চুলকোতে হবে। তালিকায় তার হদিশ পাওয়া কঠিন। এমনকি, মনিয়ার-উইলিয়ম্স্-এর (Monier-Williams) বিশাল ‘সংস্কৃত-ইংরেজী অভিধান’-এ শব্দটা খুঁজে পাইনি, যদিও আপ্তে (VS. Apte) সবিনয়ে যে-অভিধানকে ‘ছাত্রপাঠ্য’ আখ্যা দিয়েছেন তাতে চোখে পড়লো। যাই হোক, “বক্ত সিব” শুনলে সাধারণ লোক বিশেষ কিছু বুঝবে না। আর বুঝবে না বলেই কল্পনা করবে, ওসব ভয়ানক পণ্ডিতী ব্যাপার। নাক-গলাবার চেষ্টাটা নিরাপদ নয়।
অথচ, “লালা” মানেও যা, “বক্ত সিব” মানেও তাই। কেবল, দ্বিতীয়টার ব্যবহারে লোক-ঠকানে পটুতার পরিচয়। …
ভারতে বস্তুবাদ প্রসঙ্গে
দেবীপ্রসাদ চট্টোপাধ্যায়
অনুষ্টুপ প্রকাশনী
২ই নবীন কুণ্ডু লেন
কলকাতা ৭০০০০৯
BHARATE BASTUBAD PRASANGE
by Debiprasad Chattopadhyaya
(C) দেবীপ্রসাদ চট্টোপাধ্যায়
প্রথম প্রকাশ: পৌষ, ১৩৯৪
ডিসেম্বর ১৯৮৭
প্রকাশক : অনিল আচার্য
অনুষ্টুপ প্রকাশনী
২ ই নবীন কুণ্ডু লেন, কলকাতা
মুদ্রক : দি সরস্বতী প্রিন্টিং ওয়ার্কস
২ গুরুপ্রসাদ চৌধুরি লেন, কলকাতা ৭০০০০৯
প্রচ্ছদ : প্রবীর সেন
প্রচ্ছদ-মুদ্রণ : কোলো প্রিন্ট
৮০/২ বৈঠকখানা রোড, কলকাতা
বাধাই : গৌরাঙ্গ বাইণ্ডার্স
৭৪ সীতারাম ঘোষ টি, কলকাতা ৭০০০০৬
দাম : ৫০ টাকা
Reviews
There are no reviews yet.