পাঁচ নম্বর, পাঁচ নম্বর
নিজের বেডের উপর বসে সামনের খোলা জানালাটা দিয়ে বাইরের দিকে তাকিয়ে আছি। জানালাটার পরেই ওয়ার্ডের এক দিক থেকে আর দিক পর্যন্ত ঢালা লম্বা বারান্দাটা ৷ বারান্দাটার মাঝখানে গিয়ে দাঁড়ালে খোলা আকাশের সংগে মুখোমুখি দেখা হয়ে যায়। কিন্তু আমার এই বেডে বসে আকাশের ছিটেফোঁটা দেখবারও যো নেই । বারান্দাটার ওপারে একটা কদাকার বিল্ডিং পথ আটকে দাঁড়িয়ে আছে । আকাশের মুখ দেখব দূরে থাক, বাইরের আলো- বাতাসকে ঠেকিয়ে রাখাটাই যেন ওর একমাত্র কাজ। সেই উদ্দেশ্য নিয়েই যেন এক যো-হুকুম প্রহরীর মত দাঁড়িয়ে আছে । বিল্ডিংটা আসলে হয় তো তেমন কদাকার নয়, ওর এই বিশেষ ভূমিকাটিই আমার চোখে ওকে কদাকার করে তুলেছে ৷
কিন্তু ঠেকিয়ে রাখতে চাইলে কি হবে, আলো-বাতাস কি সে বাধা মানতে চায় !……দুরন্ত শিশুর মত এদিক দিয়ে ওদিক দিয়ে কেমন করে ছুটে চলে আসে, বিল্ডিংটাকে বুড়ো আংগুল দেখিয়ে ঝাঁপিয়ে পড়ে আমার এই খোলা জানালাটার উপর । আমি পরিষ্কার শুনতে পাই, ওরা যেন আমাকেই উদ্দেশ করে বলছে, এই যে আমরা এসেছি। কে আমাদের ঠেকিয়ে রাখবে!
বিল্ডিংটার দিকে তাকাই, মনে হয় রাগে ওর ঠোঁট দুটো থর থর করে কাঁপছে। কিন্তু এ ক্রোধ অক্ষমের ক্রোধ । ওর যতটা সাধ্য তা করছে, কিন্তু তার বেশী পারছে না। ওকে দেখে মনে হয় প্রচণ্ড শক্তিধর। অংগে কাঠিন্য, রুক্ষ্মতা আর রূঢ়তা। কিন্তু এত শক্তি নিয়েও ওর চলচ্ছক্তি
ওর অংগে…
সাত নম্বর ওয়ার্ড
সত্যেন সেন
সাহিত্য বুক ডিপো
চর কুতুব,ঢাকা
প্রকাশ করেছেন : বেগম সুফিয়া, চরকুতুব, ঢাকা
প্রথম প্রকাশ : শ্রাবণ-১৩৭৬
ছেপেছেন : প্রেসিডেন্সী প্রিন্টিং ওয়ার্কস্
৩৭, বাংলা বাজার, ঢাকা – ১
বেঁধেছেন : সাত্তার ব্রাদার্স
১৬, রমাকান্তনন্দী লেন, ঢাকা
অঙ্গ সজ্জায় : মতিলাল রায় (এম আর্ট )
দাম : পাঁচ টাকা মাত্ৰ
